নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলিয়া আইরিনের বয়স ৪৮ বছর। এ বয়সে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের প্রফেশনাল মাস্টার্স কোর্সে। তবে তার মাস্টার্সে ভর্তির বিষয়টি তুমুল আলোচনায় আসে ভিন্ন কারণে। সেটা হলো- তার সঙ্গে একই বিভাগের একই কোর্সে ভর্তি হন তার ২৬ বছর বয়সী ছেলে মুকসেতুল ইসলাম ওরফে আলিফ। সম্প্রতি আবারও আলোচনায় মা জুলিয়া ও ছেলে আলিফ। ভর্তির পর তারা প্রথম সেমিস্টার ফাইনালের ফলাফল হাতে পেয়েছেন। সেখানে বাজিমাত করেছেন আলোচিত এ মা-ছেলে। সিজিপিএ-৪ এর মধ্যে আলিফ ৩ দশমিক ৯৪ পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন। কম যাননি ৪৮ বছর বয়সী মা জুলিয়াও। তিনি সিজিপিএ ৩ দশমিক ৪৪ পেয়ে নবম হয়েছেন। জুলিয়া আইরিন বলেন, ‘ছেলেটা একটুর জন্য প্রথম হতে পারেনি’। এজন্য মা ও ছেলে দুজনেরই মন খারাপ। তবে মা ও ছেলে দুজনই ভালো ফল করায় পরিবারের সদস্য, বন্ধু-স্বজন, বিভাগের শিক্ষকসহ সবাই খুব খুশি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেশনাল কোর্সে পড়তে গিয়ে আরও নতুন ছেলে-মেয়ে পেয়েছেন উল্লেখ করে জুলিয়া বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে পাওয়া আরেক ছেলের নাম শেখ শামস জুবায়ের। তার সঙ্গে গ্রুপ স্টাডি করি আমরা। জানা গেছে, মা জুলিয়া ও ছেলে আলিফ দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা দুটি বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে প্রফেশনাল মাস্টার্স কোর্সে একসঙ্গে একই বিভাগে ভর্তি হয়ে বেশ আলোচনায় আসেন তারা। আলিফ সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) করেছেন। তার মা জুলিয়া আইরিন ১৯৯৪-৯৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে স্নাতক প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার পর জুলিয়া আইরিনের প্রথম সন্তান আলিফের জন্ম হয়। তবে ভালো ফল নিয়ে বিভাগ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন জুলিয়া। জুলিয়া আইরিন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। প্রায় দেড় যুগ ধরে এ পেশায় যুক্ত আছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এলএলবি করেন। ২০০৮ সালে আইন পেশায় যোগ দেন। জুলিয়ার স্বামী মিজানুল ঢাকার একটি স্কুলের ক্রীড়া বিভাগের প্রধান। তার মেয়ে তাসনিম বিনতে ইসলাম শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজিতে গ্রাফিক ডিজাইন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া বিভাগে স্নাতকে অধ্যয়নরত।