নিজস্ব প্রতিবেদক
সপ্তাহ না পেরুতেই আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে চালসহ বেশকিছু ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। ভরা মৌসুমে আরও চড়া হয়েছে সবজির দাম। বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি, আটা, ময়দা, ডাল, ছোলা, আদা ও রসুনসহ আরও বেশ কিছু পণ্যমূল্য। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
নিত্যপণ্যের দাম বাড়া প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্বাচনের কারণে সরবরাহ বিঘিঘ্নিত হওয়ায় পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে সাধারণ ভোক্তারা মনে করছেন, সরকারের ভোটের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির অতিমুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন। কাওরানবাজারে হোস্টেলের সাপ্তাহিক বাজার করতে আসেন শ্রাবনী ও সুলতানা নামের দুই শিক্ষার্থী। উভয়ই রাজধানীর একটি নার্সিং কলেজে অধ্যায়নরত। শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে তারা বলেন, ভেবেছিলাম শীতকালে সবজির দাম সাধ্যের মধ্যে থাকবে। কিন্তু প্রতি সপ্তাহেই সবজির দাম বাড়ছে। চাল, ডাল, আলু, পিঁয়াজের দাম আমাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। হোস্টেলের মিল খরচ বেড়েছে। এজন্য পরিমাণমতো বাজার করতে পারছি না। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনের ব্যবধানে বাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। এখন সরু (মিনিকেট) চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা দরে। যা ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা ছিল। মাঝারি (বিআর-২৮, পায়জাম) চালের কেজিতে সর্বোচ্চ তিন টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। দুই টাকা বেড়ে মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা।
এদিকে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া সবজির দাম। এরমধ্যে আরও একদফা বেড়েছে এই কাঁচা পণ্যটির দাম। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এখন সব ধরনের সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী। কাঁচা পেঁপে ও মুলা ছাড়া ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি বাজারে নেই। ভরা মৌসুমে শিম প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০ টাকার নিচে মিলছে না। এক পিস লাউয়ের দাম ঠেকেছে ১০০ টাকায়। বাজারে বছরজুড়ে পাওয়া যায় এমন গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা ও বরবটির কেজিও ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
বাজারে সবজি কিনতে আসা কবির হোসেন বলেন, শীতের সবজির দাম শুরুতে বেশি থাকে। পরে দ্রুত দাম নেমে আসে। এবার সেটা হলো না। বিষয়টা অবাক করার মতো। হয়তো আমরা বেশি দামে কিনতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এ জন্য ব্যবসায়ীরা দাম কমাচ্ছেন না। অন্যদিকে দুদিনের ব্যবধানে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকা। যা দুদিন আগেও ২০০ থেকে ২০৫ টাকা ছিল। সোনালি জাতের মুরগির দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায়। এছাড়া গরুর মাংসের বেঁধে দেওয়া দাম ৬৫০ টাকা হলেও রাজধানীর অধিকাংশ বাজারে ওই দামে গরুর মাংস মিলছে না। প্রতি কেজি গরুর মাংস এখন ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ মাংস বিক্রির দোকানে নেই মূল্যতালিকাও। মুদি বাজারে ছোলার কেজি ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে এখন তা বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। এছাড়া দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। বেড়েছে মসুর ডালের দামও। প্রতি কেজি ভালো মানের মসুর ডাল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা আগের থেকে ১০ টাকা বেশি। বাজারে আটা, ময়দা, পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম বেড়েছে।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা বলছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্যাকেটজাত আটা ও ময়দার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। এখন বাজারে প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই দাম ছিল কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে প্যাকেটজাত আটার দাম বেড়েছে কেজিতে ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এছাড়া বাজারে পেঁয়াজের দাম সাড়ে ৫ শতাংশ বেড়ে ৮০ থেকে ১০০ টাকারমধ্যে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৮০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে পাওয়া যেত। একই সঙ্গে রসুনের দাম ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং আদার দাম ২ দশমিক ২২ শতাংশ বেড়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ইঞ্জিঃ জিএম আহসান উল্লাহ।
আইন উপদেষ্টাঃ অ্যাডভোকেট বাহা উদ্দিন বাহার।
ইমেলঃ news@sokolerkhabor.com
বার্তা ও বাণিজ্যিকঃ ০১৭১৫-২৫২৬০৮ , ০১৬৩৮২৬০৯৩৪
অফিসঃ ৬০নং চামেলীবাগ, শান্তিনগর, ঢাকা-১২১৭
কারিগরী সহায়তায়ঃ বিডি আইটি হোম-০১৭০০৬০৩০৪০,লাকসাম,কুমিল্লা।