আবু ইউসুফ
কয়েকদিনের চলমান অতিবৃষ্টির কারণে ভয়াবহ বন্যায় ডুবে গেছে কুমিল্লা, মনোহরগঞ্জ উপজেলার ৯০ ভাগ এলাকা। ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষ ছুটছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে সাথে নিয়ে যাচ্ছে গবাদিপশুসহ হাস মুরগি। স্মরণকালের ভয়াবহ বানের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে সবকিছু। সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন স্থানীয়রা। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের সাহায্যে নানা পদক্ষেপ নিলেও উপজেলাজুড় বইছে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। বন্যার পানিতে লক্ষাধিক মানুষ আটকা পড়েছেন নিজ বাড়িতে। প্রবল বর্ষণ আর অথৈ পানি মাড়িয়ে যেতে পারছেন না আশ্রয় কেন্দ্রে। চুলায় আগুন জ্বালাতে না পেরে অনেকের খাদ্য সংকটও দেখা দিয়েছে। নারী, শিশু আর বয়স্কদের নিয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন পরিবারগুলো। বন্যার কারণে উপজেলাজুড়ে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
ইতোমধ্যে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, মনোহরগঞ্জ প্রেসক্লাব, জামায়াতে ইসলামী,ইসলামী ছাত্র শিবির, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কিন্তু প্রবল বৃষ্টি না থামায় বিঘ্ন ঘটছে উদ্ধার তৎপরতায়। ব্যক্তিগতভাবেও সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন অনেকেই।
বন্যার পানিতে আটকেপড়া অনেকে উদ্ধার অভিযানের আহ্বান জানিয়ে স্যোসাল মিডিয়ায় লিখছেন পানিতে বাড়ি ঘর ডুবে যাচ্ছে। জরুরি উদ্ধার অভিযান প্রয়োজন।’
অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘আমাদের চারপাশ ডুবে গেছে। এই বৃষ্টি চলমান থাকলে সব ডুবে যাবে।’
ভয়াবহ এই বন্যায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা, পানির নিচে তলিয়ে গেছে অধিকাংশ রাস্তা ঘাট। এনিয়ে অনেকে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা নিয়ে বলছেন ‘বাড়ি ও এলাকার কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না! কারো কাছে সবশেষ তথ্য থাকলে জানান প্লিজ।’ দ্রুত উদ্ধার অভিযান বাড়ানোর আকুতি জানিয়েছেন অনেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় ঘর বাড়ি ডুবে যাওয়ার ফলে উপজেলার অনেকের ঘরে খাবার নাই, বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। জরুরি তাদের উদ্ধার করতে হবে যে কোনোভাবেই। অনেকেই বলেছেন উদ্ধারের জন্য নৌকা বা স্পিড বোট না পেলে অনেকেই পানির স্রোত এবং পানির উচ্চতার কারণে গবাদিপশু মারা যেতে পারে।
তাই সেনাবাহিনীকে উদ্ধারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজালা রানী চাকমা বলেন বন্যা পরিস্থিতি কারণে ইতোমধ্যে প্রায় ৫ শতাধিক লোকজন বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন জেলা প্রশাসন থেকে বন্যার্তদের জন্য কিছু নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সেটি পেলে আমরা শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ টেবলেটসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ বিতরণ করতে পারবো বলে তিনি জানান।
উপজেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ অধিদপ্তরের উপ প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে বিপলাশারের কাচি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাথেরপেটুয়া ডিগ্রি কলেজসহ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে কিছু পরিবার তাদের গবাদিপশু হাস মুরগি নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে তিনি ঠিক কত পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন তা সঠিকভাবে বলতে পারেননি। তিনি বলেন আমরা আমাদের সাধ্যনুযায়ী উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
মনোহরগঞ্জ প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক মোঃ আবু ইউসুফ বলেন ভয়াবহ এই দুর্যোগে দলমতের উর্ধ্বে উঠে সবাইকে অসহায় মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে।
উপজেলা জামায়াতের আমির হাফেজ নুরনবী বলেন বন্যায় আটকেপড়া লোকজনকে উদ্ধার এবং তাদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য মাঠে কাজ করার জন্য জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামি ছাত্র শিবিরের সকল জনশক্তিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে শুকনো খাবারসহ ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছি।
উপজেলার বন্যা কবলিত সাধারণ মানুষ বলেন সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই।’
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ ইঞ্জিঃ জিএম আহসান উল্লাহ।
আইন উপদেষ্টাঃ অ্যাডভোকেট বাহা উদ্দিন বাহার।
ইমেলঃ news@sokolerkhabor.com
বার্তা ও বাণিজ্যিকঃ ০১৭১৫-২৫২৬০৮ , ০১৬৩৮২৬০৯৩৪
অফিসঃ ৬০নং চামেলীবাগ, শান্তিনগর, ঢাকা-১২১৭
কারিগরী সহায়তায়ঃ বিডি আইটি হোম-০১৭০০৬০৩০৪০,লাকসাম,কুমিল্লা।