মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুগ্ম পরিচালক আলমগীর গিলে খাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখা

  • রিপোটার্স নেইম
  • আপডেট এর সময় ০৭:২১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪
  • ১৪১ কত জন দেখেছেন
খবরটি শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার

বিআইডব্লিউটিএ বন্দর সদরঘাট শাখার যুগ্ম পরিচালক মোঃ আলমগীর হোসেন গিলে খাচ্ছে। যার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেনা আশুলিয়া,গাবতলি, সদরঘাটসহ তার অধীনস্ত বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখার সকল বৈধ ও অবৈধ স্থাপনা।

খোজ নিয়ে জানা যায়, সদরঘাট বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মোঃ আলমগীর হোসেন প্রায় দুই বছর সদরঘাট বন্দর শাখার দায়িত্বে আছেন। দীর্ঘদিন একই স্নানে থাকার সুবাদে গড়ে তুলেছেন চাঁদাবাজির বিশাল এক অন্ধকার স্বর্গরাজ্য।সুদূর আশুলিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জের কিছু অংশে যতগুলো নৌ- ঘাট, বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য উঠা- নামার জন্য নিজেদের তৈরী ঘাট,মীর সিমেন্ট, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন কোম্পানির নিকট থেকে নদীবন্দর সদরঘাট শাখার ছদ্মনাম (কালাম) এর মাধ্যমে প্রতিমাসে কোটি টাকার ও বেশি নগদ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন যুগ্ম পরিচালক মোঃ আলমগীর হোসেন ও তার সহকর্মীরা।

সুত্রমতে, আশুলিয়া, বুড়িগঙ্গা নদীর হাসনাবাদসহ, নারায়ণগঞ্জের কিছু অংশে নদীর পাড় দিয়ে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের একটি সীমানা পিলার দেয়া আছে। তাই সীমানা পিলার থাকার সুবাদে,যে সকল কোম্পানি কাজের জন্য নদীবন্দর এর সীমানা পিলার অতিক্রম করেছে তাদের নিকট থেকে ফুট বাই ফুট অনুযায়ী মাসিক চাঁদা আদায় করেন যুগ্ম পরিচালক আলমগীর হোসেন এর লোক।
তথ্য অধিকার আইনে গত ৩১-১২-৪০২৩ ইং জনসংযোগ কর্মকর্তা বিআইডব্লিউটিএ বরাবর কিছু তথ্য চেয়ে আবেদন করা হয়। উক্ত আবেদনপত্রে যে তথ্যগুলো চাওয়া হয়েছিল নদী বন্দর সদরঘাট ও নারায়ণগঞ্জ এর আওতায় কতগুলো ইজারাদার আছে তাদের নাম মোবাইল নাম্বার ও এরিয়া,সোনারগাঁ মেঘনাঘাট এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ এর কোন সীমানা পিলার আছে কিনা, হোলসিম সিমেন্ট, মেঘনা গ্রুপ, আল মদিনা গ্রুপ, আল মোস্তফা গ্রুপ, আনন্দ গ্রুপ, ইসলাম ডকইয়ার্ড,মুসকান সয়াবিন তেল, ড্যানিশ কনডেন্সড মিল্কসহ কতগুলো কোম্পানি বিআইডব্লিউটিএ এর কতটুকু পরিমাণ জমি ব্যবহার করছেন এবং সরকারকে কে কত টাকা উৎস কর দিচ্ছেন তার বাৎসরিক ইস্টিমেট, ফতুল্লা লঞ্চঘাটে ১৩ টি দোকান কোন ব্যক্তির নামে দেওয়া হয়েছে তাদের তালিকা এবং লোড আনলোড বাবদ ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে টন প্রতি কত টাকা নেওয়ার নিয়ম আছে। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ০৬-০৩-২০২৪ ইং বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ যে তথ্য দিয়েছে -(ক) চাহিত তথ্য সুনির্দিষ্ট নয় । ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন ঘাট/পয়েন্ট বহুকাল পূর্ব হতে বিভিন্ন ব্যক্তির অনুকূলে বিআইডব্লিউটিএ ইজারা প্রদান করে আসছে। ফলে এতদসংক্রান্ত তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কোন কোন ঘাটের কোন কোন সময়ের তথ্য প্রয়োজন তা সুনির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন। (খ)মেঘনা ঘাট নদীবন্দর সীমানায় কিছু কিছু এলাকায় সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। সীমানা পিলার স্থাপন কাজ এখনো চলমান রয়েছে, পর্যায়ক্রমে উক্ত নদীবন্দরের সমগ্র এলাকায় সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। (গ) The ports a,108 ও Port Rules 1966এর বিধি বিধান অনুসরণ-পূর্বক নৌ-বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার লক্ষ্যে হোলসিম সিমেন্ট-১৯০১শতাংশ,মেঘনা গ্রুপ-১০৬৩ শতাংশ,আল মদিনাগ্রুপ-২৭৯শতাংশ, আনন্দ শিপইয়ার্ড ৮৮শতাংশ,
ইসলাম ডকইয়ার্ড ৫ শতাংশ, ফোরশোর ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। প্রশ্নের একাংশে উল্লেখ করা হয়েছে সরকারকে কে কত টাকা উৎস দিচ্ছে তার বাৎসরিক ইষ্টিমেট প্রশ্নের এ অংশের মাধ্যমে কি জানতে চাওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। (ঘ) আবেদনে ১৩ টি দোকানের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল কর্তৃপক্ষ দেখিয়েছেন ৯টি নামসহ ঠিক আছে।(ঙ) যে সকল প্রতিষ্ঠান নদীর তীরে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে ওই সকল প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিএ’র নিকট হতে তীরভূমি লাইসেন্স গ্রহণ পূর্বক সেখানে জেটি, কনভেয়ার বেল্ট ইত্যাদি স্থাপন করে মালামাল লোড আনলোড করে। এরূপ লোড- আনলোড বাবদ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত রেট চার্ট অনুযায়ী বিআইডব্লিউটিএ-কে বাৎসরিক টন প্রতি ৩০/- ত্রিশ টাকা হারে শুল্ক পরিশোধ করে থাকে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, ড্যানিশ কনডেন্সড মিল্ক ও মুসকান সয়াবিন তেল কোম্পানির কথা উল্লেখ নাই।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, গাবতলি ল্যান্ডিং স্টেশন শুল্ক আদায় ও লেবার হ্যান্ডলিং পয়েন্ট ( ওয়াটার বাস টার্মিনাল ও ক্যান্টিনসহ) ইজারাদার মোঃ মনোয়ার হোসেন। এক বছর মেয়াদের জন্য সাত কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার এবং প্রতি টন পণ্য লোড- আনলোডের জন্য সরকার রাজস্ব পাবে ৩০টাকা। অথচ গাবতলী সহ অধিকাংশ পয়েন্ট থেকেই লোড আনলোড বাবদ ৬৫ টাকা ইজারা আদায় করছেন উক্ত এলাকার ইজারাদারগন। তাছাড়াও সিন্নিরটেক ও আমিনবাজার এলাকায় নদী দখল করে গড়ে তুলেছেন একাধিক খাবার হোটেল এবং গাড়ি পার্কিং এর জায়গা।গাবতলী এলাকায় মির সিমেন্ট কোম্পানি বিআইডব্লিউটিএ’র সীমানা পিলার অতিক্রম করে ১০ থেকে ১২ গজ নদীর ভিতরের দিকে যাচ্ছে। ঠিক এরকম শতাধিক প্রতিষ্ঠান নদীবন্দর এর নির্দিষ্ট সীমানা পিলার অতিক্রম করে তাদের প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়াও অনেকেই বিআইডব্লিউটিএ’র জমি বা ফোরশোর ব্যবহারের আবেদন করেই জায়গা ভরাট করছে। এখন জনমনে প্রশ্ন আসতেই পারে নদীবন্দর কর্তৃপক্ষই কি ভূমি দস্যদের ভূমি দখলে সহযোগিতা করে থাকেন? নাকি কালো চশমার অন্তরালে জনগণের টাকা খেয়ে সরকারের চেয়ারে বসে খোঁত সরকারের চোখে ধূলো দিয়ে সরকারকেই ঠকাচ্ছেন?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পথচারী ও একাধিক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানায়, প্রতিমাসেই বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাট থেকে লোক এসে প্রত্যেকটা ব্যবসায়ীর নিকট থেকে টাকা নিয়ে যায়। তারা আরও জানায় নদীর সীমানা পিলার এবং ছোট – ছোট সেতু ঘেঁষে বালু,কয়লা, সিমেন্ট ও পাথর রাখায় অতিরিক্ত চাপে ঐ সকল সীমানা পিলার ও সেতু ভেঙে যাচ্ছে। যে কারনে ভূমি দস্যুরা নদী দখল করতে সুযোগ ও সাহস পায়। তাছাড়া ও নিজেদের ইচ্ছেমত যেখানে – সেখানে পণ্য লোড- আনলোডের ঘাট বানিয়ে নেওয়ার ফলে নদী হারাচ্ছে তার নাব্যতা ও সৌন্দর্য।

গাবতলীসহ সদরঘাট নৌ-পরিবহন
অধিদপ্তরের আওতাধীন লোড /আনলোড বাবদ প্রতি টনে ৬৫ টাকা নেওয়ার ব্যাপারে কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে অনেক ব্যবসায়ী জানায়, মুঠোফোন এত কথা বলা যাবে না আপনি সামনে এসে কথা বলেন। এমনকি কয়েকজন ব্যবসায়ী লোড/আনলোড বাবদ ৬৫ টাকা ইজারা নেওয়ার কথা ও স্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে সদরঘাট বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মোঃ আলমগীর হোসেনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সদরঘাট বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মোঃ আলমগীর হোসেনের অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা জানতে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানায়, আমার অধীনে কেউ অনিয়ম ও দুর্নীতি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগঃ

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

যুগ্ম পরিচালক আলমগীর গিলে খাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখা

আপডেট এর সময় ০৭:২১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪
খবরটি শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার

বিআইডব্লিউটিএ বন্দর সদরঘাট শাখার যুগ্ম পরিচালক মোঃ আলমগীর হোসেন গিলে খাচ্ছে। যার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেনা আশুলিয়া,গাবতলি, সদরঘাটসহ তার অধীনস্ত বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখার সকল বৈধ ও অবৈধ স্থাপনা।

খোজ নিয়ে জানা যায়, সদরঘাট বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মোঃ আলমগীর হোসেন প্রায় দুই বছর সদরঘাট বন্দর শাখার দায়িত্বে আছেন। দীর্ঘদিন একই স্নানে থাকার সুবাদে গড়ে তুলেছেন চাঁদাবাজির বিশাল এক অন্ধকার স্বর্গরাজ্য।সুদূর আশুলিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জের কিছু অংশে যতগুলো নৌ- ঘাট, বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য উঠা- নামার জন্য নিজেদের তৈরী ঘাট,মীর সিমেন্ট, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন কোম্পানির নিকট থেকে নদীবন্দর সদরঘাট শাখার ছদ্মনাম (কালাম) এর মাধ্যমে প্রতিমাসে কোটি টাকার ও বেশি নগদ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন যুগ্ম পরিচালক মোঃ আলমগীর হোসেন ও তার সহকর্মীরা।

সুত্রমতে, আশুলিয়া, বুড়িগঙ্গা নদীর হাসনাবাদসহ, নারায়ণগঞ্জের কিছু অংশে নদীর পাড় দিয়ে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের একটি সীমানা পিলার দেয়া আছে। তাই সীমানা পিলার থাকার সুবাদে,যে সকল কোম্পানি কাজের জন্য নদীবন্দর এর সীমানা পিলার অতিক্রম করেছে তাদের নিকট থেকে ফুট বাই ফুট অনুযায়ী মাসিক চাঁদা আদায় করেন যুগ্ম পরিচালক আলমগীর হোসেন এর লোক।
তথ্য অধিকার আইনে গত ৩১-১২-৪০২৩ ইং জনসংযোগ কর্মকর্তা বিআইডব্লিউটিএ বরাবর কিছু তথ্য চেয়ে আবেদন করা হয়। উক্ত আবেদনপত্রে যে তথ্যগুলো চাওয়া হয়েছিল নদী বন্দর সদরঘাট ও নারায়ণগঞ্জ এর আওতায় কতগুলো ইজারাদার আছে তাদের নাম মোবাইল নাম্বার ও এরিয়া,সোনারগাঁ মেঘনাঘাট এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ এর কোন সীমানা পিলার আছে কিনা, হোলসিম সিমেন্ট, মেঘনা গ্রুপ, আল মদিনা গ্রুপ, আল মোস্তফা গ্রুপ, আনন্দ গ্রুপ, ইসলাম ডকইয়ার্ড,মুসকান সয়াবিন তেল, ড্যানিশ কনডেন্সড মিল্কসহ কতগুলো কোম্পানি বিআইডব্লিউটিএ এর কতটুকু পরিমাণ জমি ব্যবহার করছেন এবং সরকারকে কে কত টাকা উৎস কর দিচ্ছেন তার বাৎসরিক ইস্টিমেট, ফতুল্লা লঞ্চঘাটে ১৩ টি দোকান কোন ব্যক্তির নামে দেওয়া হয়েছে তাদের তালিকা এবং লোড আনলোড বাবদ ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে টন প্রতি কত টাকা নেওয়ার নিয়ম আছে। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ০৬-০৩-২০২৪ ইং বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ যে তথ্য দিয়েছে -(ক) চাহিত তথ্য সুনির্দিষ্ট নয় । ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন ঘাট/পয়েন্ট বহুকাল পূর্ব হতে বিভিন্ন ব্যক্তির অনুকূলে বিআইডব্লিউটিএ ইজারা প্রদান করে আসছে। ফলে এতদসংক্রান্ত তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কোন কোন ঘাটের কোন কোন সময়ের তথ্য প্রয়োজন তা সুনির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন। (খ)মেঘনা ঘাট নদীবন্দর সীমানায় কিছু কিছু এলাকায় সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। সীমানা পিলার স্থাপন কাজ এখনো চলমান রয়েছে, পর্যায়ক্রমে উক্ত নদীবন্দরের সমগ্র এলাকায় সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। (গ) The ports a,108 ও Port Rules 1966এর বিধি বিধান অনুসরণ-পূর্বক নৌ-বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার লক্ষ্যে হোলসিম সিমেন্ট-১৯০১শতাংশ,মেঘনা গ্রুপ-১০৬৩ শতাংশ,আল মদিনাগ্রুপ-২৭৯শতাংশ, আনন্দ শিপইয়ার্ড ৮৮শতাংশ,
ইসলাম ডকইয়ার্ড ৫ শতাংশ, ফোরশোর ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। প্রশ্নের একাংশে উল্লেখ করা হয়েছে সরকারকে কে কত টাকা উৎস দিচ্ছে তার বাৎসরিক ইষ্টিমেট প্রশ্নের এ অংশের মাধ্যমে কি জানতে চাওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। (ঘ) আবেদনে ১৩ টি দোকানের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল কর্তৃপক্ষ দেখিয়েছেন ৯টি নামসহ ঠিক আছে।(ঙ) যে সকল প্রতিষ্ঠান নদীর তীরে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে ওই সকল প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিএ’র নিকট হতে তীরভূমি লাইসেন্স গ্রহণ পূর্বক সেখানে জেটি, কনভেয়ার বেল্ট ইত্যাদি স্থাপন করে মালামাল লোড আনলোড করে। এরূপ লোড- আনলোড বাবদ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত রেট চার্ট অনুযায়ী বিআইডব্লিউটিএ-কে বাৎসরিক টন প্রতি ৩০/- ত্রিশ টাকা হারে শুল্ক পরিশোধ করে থাকে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, ড্যানিশ কনডেন্সড মিল্ক ও মুসকান সয়াবিন তেল কোম্পানির কথা উল্লেখ নাই।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, গাবতলি ল্যান্ডিং স্টেশন শুল্ক আদায় ও লেবার হ্যান্ডলিং পয়েন্ট ( ওয়াটার বাস টার্মিনাল ও ক্যান্টিনসহ) ইজারাদার মোঃ মনোয়ার হোসেন। এক বছর মেয়াদের জন্য সাত কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার এবং প্রতি টন পণ্য লোড- আনলোডের জন্য সরকার রাজস্ব পাবে ৩০টাকা। অথচ গাবতলী সহ অধিকাংশ পয়েন্ট থেকেই লোড আনলোড বাবদ ৬৫ টাকা ইজারা আদায় করছেন উক্ত এলাকার ইজারাদারগন। তাছাড়াও সিন্নিরটেক ও আমিনবাজার এলাকায় নদী দখল করে গড়ে তুলেছেন একাধিক খাবার হোটেল এবং গাড়ি পার্কিং এর জায়গা।গাবতলী এলাকায় মির সিমেন্ট কোম্পানি বিআইডব্লিউটিএ’র সীমানা পিলার অতিক্রম করে ১০ থেকে ১২ গজ নদীর ভিতরের দিকে যাচ্ছে। ঠিক এরকম শতাধিক প্রতিষ্ঠান নদীবন্দর এর নির্দিষ্ট সীমানা পিলার অতিক্রম করে তাদের প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়াও অনেকেই বিআইডব্লিউটিএ’র জমি বা ফোরশোর ব্যবহারের আবেদন করেই জায়গা ভরাট করছে। এখন জনমনে প্রশ্ন আসতেই পারে নদীবন্দর কর্তৃপক্ষই কি ভূমি দস্যদের ভূমি দখলে সহযোগিতা করে থাকেন? নাকি কালো চশমার অন্তরালে জনগণের টাকা খেয়ে সরকারের চেয়ারে বসে খোঁত সরকারের চোখে ধূলো দিয়ে সরকারকেই ঠকাচ্ছেন?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পথচারী ও একাধিক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানায়, প্রতিমাসেই বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাট থেকে লোক এসে প্রত্যেকটা ব্যবসায়ীর নিকট থেকে টাকা নিয়ে যায়। তারা আরও জানায় নদীর সীমানা পিলার এবং ছোট – ছোট সেতু ঘেঁষে বালু,কয়লা, সিমেন্ট ও পাথর রাখায় অতিরিক্ত চাপে ঐ সকল সীমানা পিলার ও সেতু ভেঙে যাচ্ছে। যে কারনে ভূমি দস্যুরা নদী দখল করতে সুযোগ ও সাহস পায়। তাছাড়া ও নিজেদের ইচ্ছেমত যেখানে – সেখানে পণ্য লোড- আনলোডের ঘাট বানিয়ে নেওয়ার ফলে নদী হারাচ্ছে তার নাব্যতা ও সৌন্দর্য।

গাবতলীসহ সদরঘাট নৌ-পরিবহন
অধিদপ্তরের আওতাধীন লোড /আনলোড বাবদ প্রতি টনে ৬৫ টাকা নেওয়ার ব্যাপারে কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে অনেক ব্যবসায়ী জানায়, মুঠোফোন এত কথা বলা যাবে না আপনি সামনে এসে কথা বলেন। এমনকি কয়েকজন ব্যবসায়ী লোড/আনলোড বাবদ ৬৫ টাকা ইজারা নেওয়ার কথা ও স্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে সদরঘাট বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মোঃ আলমগীর হোসেনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সদরঘাট বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মোঃ আলমগীর হোসেনের অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা জানতে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানায়, আমার অধীনে কেউ অনিয়ম ও দুর্নীতি করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।