ফরিদপুরের মধুখালীতে মন্দিরে প্রতিমায় আগুন দেয়ার অভিযোগ তুলে দুই নির্মাণ শ্রমিকের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের (দোষী) আগামী বুধবারের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। অন্যথায় আগামী শুক্রবার প্রত্যেকটা জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল করবে। পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইসলামী আন্দোলন।
শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম। মিছিল শেষে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করেন। তাদের মিছিলটি পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংক ঘুরে আবারও বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটের সামনে এসে শেষ হয়।
‘ফরিদপুরের মধুখালিতে কতিপয় উগ্র সন্ত্রাসী কর্তৃক নিরীহ হাফেজ কুরআন দুই সহোদয় শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবিতে’ এ বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগ উত্তর ও দক্ষিণ।
মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম বলেন, আগামী বুধবারের মধ্যে যদি সরকার দোষীদের গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হলে আগামী শুক্রবার সারাদেশে প্রত্যেকটা জেলা ও মহানগরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। এরপরেও যদি সরকার ব্যর্থ হয় তাহলে পরবর্তী এমন কর্মসূচি দেয়া হবে, এই ইস্যুতে বাংলাদেশের জনগণ রাস্তার নামবে। দোষীদের গ্রেপ্তারের জন্য সরকারকে বাধ্য করবে। আর এই অবৈধ সরকারকেও বিদায় করতে বাধ্য করবে, ইনশাআল্লাহ।
বর্তমান সরকার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কর্তৃক নিয়োজিত সরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।তিনি বলেন, ফরিদপুরে দুই ভাইকে বেঁধে রেখে সারা রাত নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। কেনো হত্যা করা হয়েছে? তারা না কী মন্দিরে আগুন দিয়েছে।
অথচ প্রমাণিত তারা মন্দিরে আগুন দেন নাই। তারা কাজ করতেছিলো। কিন্তু এক সপ্তাহ হয়ে যাওয়ার পরেও সরকার হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করেনি!
মন্দিরে আগুন দেয়ার প্রসঙ্গে ফয়জুল করিম বলেন, আপনারা (সরকার) তদন্তভিত্তিক তার বিচার করেন। আমি এটাও দাবি করছি। আর যারা দু’জন শ্রমিককে হত্যা করেছে, বাংলার জমিনে তাদের বিচার করতে হবে। আজকে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতার বিনিময়ে বাংলাদেশের মুসলমানদেরকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে গোলাম হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছেন। এদেশের মুসলমানরা স্বাধীন নয়। সমস্ত মুসলমানরা বিক্রি হয়ে গেছে। তাদেদের গলার মধ্যে গোলামীর জিঞ্জির লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সব জায়গাতেই ভারত। কে মন্ত্রী হবে, কার সব চাকরিতে কার পদোন্নতি হবে, কখন হবে এবং কোথায় হবে- এসব তো আমাদের দেশ (বাংলাদেশ) নির্ধারণ করে না। আজকে ভারতে নির্বাচন চলছে। সব নরেন্দ্র মোদির কারসাজি। আমি মনে করি, সব ইসকনের কারসাজি। এদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ভিত্তিতে ওই দেশে (ভারত) ভোট তৈরী করা হয়। এজন্য ষড়যন্ত্রের আওতায় নিয়ে এসেছে। সব জায়গায় ‘ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা’ র। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে, মিডিয়ায় যান, সেখানে ‘র’ বসা। সব জায়গাতেই ‘র’।
উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ সভাপতিত্বে মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম প্রমুখ।