২৪ তম বিসিএস ক্যাডারের অনেকেই নিয়োগ, বদলি বাণিজ্য, প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ, অর্থ পাচারসহ ছাত্র আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
২৪ তম বিসিএস ক্যাডারের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের মধ্যে বর্তমান অতিরিক্ত পোস্টমাস্টার জেনারেল আক্তারুজ্জামান অন্যতম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য ও বটে।
২৪ তম বিসিএস অল ক্যাডার অফিসার্স ফোরামের ৬ বছর ধরে জেনারেল সেক্রেটারি এবং সভাপতি প্রলয় কুমার জোয়ার্দার তৎকালীন পুলিশ সুপার যশোর। মনিরামপুরের এমপি স্বপনের জামাই হিসেবে তার পরিচিতি ও কম নাই। স্বৈরাচারী সরকারের প্রঢৌকল অফিসার থাকার সময় এসপি প্রলয় স্বপনকে এমপি বানিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এই প্রলয় কুমার ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যার মাস্টারমাইন্ড। আওয়ামী দালাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-সচিব খুরশিদ আলম চৌধুরী বর্তমানে আমেরিকায়,২৪ তম বিসিএস ক্যাডারের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের মধ্যে বর্তমান অতিরিক্ত পোস্টমাস্টার জেনারেল আক্তারুজ্জামান অন্যতম। স্বর্ণেন্দু শেখর মন্ডল(পূর্ত বিভাগ) এরকম ২৪ বিসিএস ক্যাডারের আরো অনেকেই এই আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য ও অর্থ যোগান দিয়েছিলেন। বিশেষ করে স্বর্ণেন্দু শেখর মন্ডল গণপূর্ত অধিদপ্তর ঢাকাতে ১ যুগের ও বেশি সময় থাকার পরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের পর ঢাকার বাইরে পোস্টিং হয়েছে। স্বর্ণেন্দু শেখর মন্ডল ছাড়াও গণপূর্ত অধিদপ্তরের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলীসহ এক ডজনের ও বেশি প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিপুল পরিমাণ অর্থ যোগানসহ ছাত্র আন্দোলনকে নশ্চাত করতে একনিষ্ঠ ভূমিকা পালন করায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে। আখতারুজ্জামান বিসিএস ফোরামের নাম দিয়ে পিকনিক, আবাসন প্রজেক্ট, কমার্শিয়াল প্রজেক্ট, শীতবস্ত্র বিতরণ ও সভা সমিতির নামে অসংখ্য চাঁদাবাজির সাথে যুক্ত এবং তদবির বাজ হিসেবে ও তার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। কমার্শিয়াল প্রজেক্ট-১ এর কোটি কোটি টাকা মুনাফা বিনিয়োগকারী অফিসারদের দেওয়া হয়নি বলে শোনা যাচ্ছে। পদোন্নতি, বদলি ও তদবির বাজির মাধ্যমে আখতারুজ্জামান বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন । এমন কি আক্তারুজ্জামানের তদবিরে তার স্ত্রী পদার্থ বিদ্যার শিক্ষক হিসেবে ১৫ বছর ধরে ইডেন কলেজে কর্মরত এবং সুবিধাপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ব্যাপক পরিচিত আছে তার। ডাকের সাবেক ডিজি তরুণ কান্তি সিকদারের দুর্নীতির সহযাত্রী হওয়ার কারণে রংপুরে পোস্টিং নিলেও সে অফিস করত না। সাবেক ডিজি তরুণ কান্তি সিককার শুধু দুর্নীতিবাজই ছিলেন না, নারি কেলেঙ্কারিতেও ওস্তাদ ছিলেন। টুংগীপাড়া পোস্ট অফিসের এক নারী কেলেঙ্কারির বিষয় ধামাচাপা দেয়ার জন্য আখতারুজ্জামান এসপি প্রলয়ের সাথে তদবির করে তরুন কান্তি সিকদারকে বাঁচিয়ে দেন। যে কারণে তরুণ কান্তি সিকদার আখতারুজ্জামানকে অর্থসহ শুদ্ধাচার পুরস্কার দেন। তাছাড়াও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে বেগবান করতে তার সংগঠনকে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে দালাল, দুর্নীতিবাজ এসপি প্রলয়ের সহচর, দালাল উপসচিব খুরশিদের অনুচর তদবির বাজ আখতারুজ্জামান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে তদবিরের মাধ্যমে ঢাকায় পোস্টিং নিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে শীঘ্রই সে উপ-সচিব পদে আদিষ্ট হবেন তাতেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। গোয়েন্দার মাধ্যমে আখতারুজ্জামানের বিষয়ে খোঁজ নিতে তারা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন। এবিষয়ে আখতারুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অর্থ যোগান দেওয়ার ব্যাপারে জানতে গণপূর্তের বর্তমান গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী স্বর্ণেন্দু শেখর মন্ডলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, অর্থ যোগান দেয়ার অভিযোগটি মিথ্যা। তবে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে ১২ বছরের ও বেশি সময় থাকার কথা তিনি স্বীকার করেছেন।